রাবিপ্রবি’র মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ ও ক্যাম্পাস পরিদর্শন

Publish Date: 25 Nov 2025 10:31:29 AM

রাবিপ্রবি’র মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ ও ক্যাম্পাস পরিদর্শন

বাংলাদেশে নিযুক্ত মাননীয় অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাই কমিশনার মি. ক্লিনটন পবকে’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আজ ২৫ নভেম্বর ২০২৫খ্রি. রোজ মঙ্গলবার রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আতিয়ার রহমানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যগণ হলেন ফার্স্ট সেক্রেটারি (ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এর প্রধান) জনাব সাঈদ হায়দার, প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন) জনাব ইমাম নাহিল, অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস বাংলাদেশ এর কান্ট্রি প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব কাঞ্চন খীসা এবং প্রোগ্রাম অফিসার জনাব হৃদিতা দেওয়ান।

প্রথমেই মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয় প্রতিনিধি দলকে তাঁর অফিসে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। তাঁদের সাথে সংক্ষিপ্ত একান্ত আলোচনা শেষে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভার সভাপতিত্ব করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়। অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের প্রতিনিধি দলসহ সকলকে তিনি শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর ইতিহাস ও দীর্ঘ বন্ধুর পথ অতিক্রমের কথা, বর্তমান অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র এবং একাডেমিক পরিবেশের অগ্রগতির বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন। প্রক্রিয়াধীন আরআইসি, ট্যুরিজম হাব নির্মাণের বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলেন। তিনি এ অর্থ বছরে গবেষণায় ৩১.৭৫ লক্ষ টাকা রাবিপ্রবি’র গবেষণা প্রকল্পে অনুদান প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্লাবের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ও সেবামূলক কার্যক্রমের বিষয়াদি তুলে ধরেন। কাপ্তাই লেক কেন্দ্রিক দীর্ঘ মেয়াদি গবেষণা ও অত্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরেন। অত্র অঞ্চলের জীবনমান উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত ও প্রকৌশল প্রযুক্তির সাথে সঙ্গতি রেখে একাডেমিক-বিভাগ খোলার প্রক্রিয়াধীন উদ্যোগের কথা বলেন। এছাড়া প্রতিনিধি দলের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে উচ্চতর ডিগ্রীর পাশাপাশি ট্রেনিং বেইজড শর্ট কোর্স চালুর আশ্বাস দেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাবিপ্রবি’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য যৌথ গবেষণা করার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম চালু করার জন্য সহযোগিতা কামনা করেন। শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে রাবিপ্রবিতে একটি ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার যৌথ উদ্যোগের উপর গুরুত্বারোপ করেন।  

উক্ত সভায় ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্সেস টেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব ড. মোঃ মিজানুর রহমান অস্ট্রেলিয়ায় ভিজিটিং রিসার্চার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন এবং এ অঞ্চলের উন্নয়নে গবেষণা ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে অবদান রাখার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অনুরুপভাবে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস অ্যালামনাই জনাব খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নিখিল চাকমা তাদের অভিজ্ঞতাসহ জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন, রিসার্চ এবং এভিডেন্স বেইজড প্রোডাক্ট উৎপাদন, স্থানীয়দের আর্থিক উন্নয়নসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু যা এ অঞ্চলের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে এমন প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনার জন্য আহবান জানান। এছাড়া ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্সেস টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও আরআইএমসি’র পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. আবদুল্লাহ আল মামুন চীনে অস্ট্রেলিয়ার যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও গবেষণা প্রকল্প পরিচালনার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মাননীয় অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাই কমিশনার মি. ক্লিনটন পবকে প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হৃদিক-সৌজন্যতার জন্য মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়কে ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি সকলের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যোগযোগ বৃদ্ধি ও কার্যকরি সম্পর্ক গড়ে তোলার ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তিনি অত্র অঞ্চলে ট্যুরিজম তথা পর্যটন ক্ষেত্র ও অত্র অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞতা ও রাষ্ট্রীয় নীতির বিষয়ে কথা বলেন। তিনি কৃষিভিত্তিক ও পর্যটনকেন্দ্রিক যৌথ গবেষণা প্রকল্পের বিশেষত কাপ্তাই লেককে জাতীয় উন্নয়নে ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার বিষয়ে আগ্রহ ও যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ ও আশ্বাস প্রদান করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অস্ট্রেলিয়ান সরকারের চলমান উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস এর মাধ্যমে রাবিপ্রবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার (মাস্টার্স) সুযোগ গ্রহণ এবং অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফেলোশিপের প্রোগ্রামের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় স্বল্পমেয়াদী কোর্সে আবেদনের জন্য আহবান জানান। এছাড়াও তিনি রাবিপ্রবিতে বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা, এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীর হার, উচ্চশিক্ষায় পরিবেশ সৃষ্টিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমুহ জানতে চান।

দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময় সভায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও গবেষণার কল্যাণে, বিদেশী গবেষকদের এ অঞ্চল ভ্রমণের নিয়ম নীতিতে শিথিলতা আনার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। প্রতিনিধিদলটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি) সংক্রান্ত কোর্স, ভোকেশনাল ট্রেনিং, বিদেশী ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রায়োগিক শিক্ষা, কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমণ বিষয়ক গবেষণা এবং এ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

মতবিনিময় সভা শেষে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের প্রতিনিধি দলকে নিয়ে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয় রাবিপ্রবি ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। তিনি চলমান অবকাঠামোগত সকল নির্মাণ কাজ, পরিবহনপুল, বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক বিল্ডিং, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, আরআইএমসি-আরআইসি গবেষণা কেন্দ্র এবং ক্যাফেটেরিয়া পরিদর্শন করেন। অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাই কমিশনার মি. ক্লিনটন পবকে পাহাড়-পরিবেষ্টিত ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন এবং রাবিপ্রবি’র সামগ্রিক বিশেষত অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও একাডেমিক পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পেয়ে তিনি রাবিপ্রবি’র সাথে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার মনোভাব ব্যক্ত করেন এবং উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোহাম্মদ জুনাইদ কবির, সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদ এর ডিন ড. মুহাম্মদ জামশেদ আলম পাটোয়ারী, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ এর ডিন ড. মুহাম্মদ রহিম উদ্দিন, ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগ এর চেয়ারম্যান ড. নিখিল চাকমা, ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্সেস টেকনোলজি বিভাগ এর চেয়ারম্যান ড. মোঃ মতিউর রহমান চৌধুরী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এর চেয়ারম্যান জনাব মোহনা বিশ্বাস, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ এর চেয়ারম্যান জনাব মোসা. হাবিবা, রাবিপ্রবি’র প্রক্টর জনাব সাদ্দাম হোসেন, অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস অ্যালামনাই ও ছাত্র হলের প্রভোস্ট জনাব খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জনাব সূচনা আখতার, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) ড. সুপ্রিয় চাকমা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব ড. মোঃ মিজানুর রহমান, আরআইএমসি’র পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, আইকিউএসি এর অতিরিক্ত পরিচালক (ইটিএল) ড. মোঃ আবু তালেব, উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) জনাব মোহাম্মদ কামরুল হাসান, এস্টেট শাখার উপ-রেজিস্ট্রার জনাব সেতু চাকমা, অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস অ্যালামনাই ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জনাব মিথিলা তালুকদার, অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস অ্যালামনাই ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক জনাব ত্রিবেনী চাকমাসহ রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ রায়হানুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।